হাজারো পীর-আউলিয়ার শিরোভূষণ সৈয়দ সুফি ফতেহ আলী ওয়াইসি (র.)

Daily Inqilab কায়ছার উদ্দীন আল-মালেকী

১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:২৪ এএম | আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:২৪ এএম

স্মৃতিচারণ করছি- আধ্যত্ম জগতের এক জীবন্ত কিংবদন্তিকে। যার ত্যাগ, মহিমা ও অবদানের বদৌলতে বিশে^র অগণিত মানুষ পেয়েছে সত্যের দিশা- সিরাতুল মুস্তাকিম। অসংখ্য খোদাপ্রেমী ও নবীপ্রেমীরা তাযকিয়াতুন নফস তথা- আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে আল্লাহ ও তাঁর প্রিয় রাসূল হজরত মুহাম্মদ (দ.)’র রেজামন্দি হাসিল করতে সক্ষম হয়েছেন। এ মহান খ্যাতিমান সুফির নাম ইাতহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এ মহান অলিকুল শিরোমণির নাম- হজরতুল্লামা শাহ্সুফি সৈয়দ ফতেহ আলী ওয়াইসি বর্ধমানী (রহ.)। এ মহান জ্ঞানতাপস একাধারে ছিলেন- মুফাচ্ছিরে কুরআন, শায়খুল হাদিস, ফিকাহ শাস্ত্রবিদ, ইসলামি আইনবিদ, খোদাতত্ত¡বিদ, আধ্যাত্মবিদ, ধর্মতত্ত¡বিদ, ভাষাবিদ, ধর্মপ্রচারক, কবি-সাহিত্যিক, তর্কশাস্ত্রবিদ, অলঙ্কারশাস্ত্রবিদ, রাজনীতিবিদ, চিকিৎসাবিদ, মনোবিজ্ঞানী, দানবীর, মানবতার মূর্ত প্রতীক। তিনি বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। এ মহান সাহিত্যরতেœর শব্দগত দক্ষতা, ভাষাগত দক্ষতা, ব্যাকরণগত দক্ষতা, ভাষার মাধুর্যতা, ও ছন্দময় শব্দচয়নের যোগ্যতা ছিলো অনন্য উচ্চ মাত্রার। প্রতিটি শব্দচয়ন, শব্দশৈলী, শব্দগঠন, শব্দ বিন্যাস ছিলো খুবই নান্দনিক। এশিয়া মহাদেশের ফারসি কবিদের মাঝে তিনি ছিলেন এক অতুলনীয় মহাকবি। জননন্দিত এ মহাকবি- তাসাউফ পন্থীদের কাছে পরম শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব। আত্মশুদ্ধিমূলক জ্ঞান প্রচার-প্রসারের দিক দিয়ে তিনি ছিলেন ভারতবর্ষের পীর-আউলিয়াদের মাঝে এক অনন্য অনুরকরণীয় ও অনুস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব। এ ক্ষণাজন্মা মহাপুরুষ ১৮২৫ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া থানার আমিরাবাদ ইউনিয়নের মল্লিক সোবহান গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা- সৈয়দ মাওলানা শহীদ ওয়ারেস আলী (র.) একাধারে ছিলেন- ধর্মশিক্ষক, ধর্মপ্রচারক, ধর্মযোদ্ধা। ১৮৩১ সালে বালাকোট যুদ্ধের প্রাথমিক পর্যায়ের পান্জতারের যুদ্ধে সৈয়দ ওয়ারেস আলী (র.) শাহাদাত বরণ করেন। ৬/৭ বছরের মাথায় পিতা-মাতা দু’জনে জান্নাতবাসী হন। ভারতের কয়েকটি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনে করে সর্বশেষ ‘কলকাতা আলীয়া মাদ্রাসা’ থেকে উচ্চতর কুরান-হাদিস এবং আকয়েদ-ফিকাহের জ্ঞানার্জন শেষ করে শিক্ষাজীবন ইতি টানেন। খন্ডকালীন শিক্ষকতা করেন- (১) চট্টগ্রাম সাতকানিয়া মাদ্রাসা, (২) কলকাতা আলীয়া মাদ্রাসা।

চাকুরী করেন- (১) কলকাতার দমদমের গোরা বাজার একটি গবেষণা কেন্দ্রে, (২) পলিটিক্যাল পেনশান অফিসের সুপারিনটেনডেন্ট, (৩) কলিকাতা নগর দেওয়ানী আদালত রেজিস্ট্রেশন বিভাগের প্রধান রেজিস্ট্রার, (৪) মেটিয়াবুরুজের নবাব ওয়াজেদ আলী শাহ’র একান্ত সচিব। তাঁর জ্ঞানের বিশলতা ছিলো আকাশচুম্বী। আরবি, ফারসি, ইংরেজি, হিন্দি, উর্দ্দু, বাংলায় যথেষ্ট পারদর্শী ছিলেন। আল্লাহ পাক তাঁকে অসংখ্য ধারার ঐশ^রিক জ্ঞান দান করেছিলেন। এ জ্ঞানকে আরবিতে ইলমে লাদুন্নি, ইলমে আ’তায়ি বা ইলমে মারফতি বা ইলমে বেলায়াতি বলা হয়। এ জ্ঞান অত্যন্ত দুলর্ভ। আল্লাহ পাক যাঁকে অত্যধিক ভালবাসেন তাঁকে এ জ্ঞান দান করে থাকেন। এ বরেণ্য শিক্ষাবিদ- কিছুকাল চাকুরী জীবনের মধ্যে কাটান। পরে আধ্যাত্মিক উপলব্ধির কারণে নিজেকে তাসাওফের সাধনায় নিয়োজিত করেন। তিনি চাকুরী করলেও হৃদয়ের আনন্দিত উপলব্ধিকে অন্য জগতের কাজে ব্যয় করতেন। এ জগৎ হলো- আধ্যাত্মিক জগত। মন-প্রাণকে তিনি তাসাওফের সাধনায় নিয়োজিত রাখতেন। তিনি তাঁর পীর ও মুর্শিদ- শায়খুল হাদিস, হযরত সুফি নুর মোহাম্মদ নিজামপুরী রহ.’র শিষ্যত্ব গ্রহণের পর আল্লাহ পাকের জিকিরে নিজেকে নিমগ্ন রাখতেন। তিনি যখন ধীরে ধীরে তাসাওফের সাধনায় নিজেকে সমর্পন করেন তখন চাকুরী ছাড়তে বাধ্য হন। চাকুরী ত্যাগ করে আল্লাহ ও রাসূল’র আরাধনায় নিজেকে নিয়োজিত করেন। সংসারী হয়েও বেশির ভাগ সময় আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন থাকতেন। কঠোর সাধনার মধ্যদিয়ে তরিক্বতের খেলাফত লাভ করেন। কলকাতা আলীয়া মাদ্রাসার অধ্যাপক মাওলানা গোলাম সালমানী আব্বাসি (র.) হতে বর্ণিত, একদিন সুফি ফতেহ আলী (র.) হাজেরানে মজলিশের সামনে একটি হাদীসের বয়ান করছিলেন। বর্ণনাকৃত হাদিসটি সহিহ নয় বলে আপত্তি জানান, তৎকালীন সময়ের কলকাতা আলীয়া মাদ্রাসার শিক্ষক- মাওলানা ছায়াদত হোসেন। এমতাবস্থায় সুফি ফতেহ আলী (র.) হঠাৎ অচৈতন্য হয়ে মাওলানা গোলাম সালমানী (র.) কে বললেন, বাবা! তুমি মাওলানার মস্তকে পানি ঢেলে দাও। পানি ঢালার পর মাওলানা সাহেব চৈতন্য লাভ করেন। তৎপর মাওলানা সাহেব বললেন, হাদিসটি সহিহ! মাওলানা সাহেব চলে গেলে সালমানী ছাহেব এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সুফি ফতেহ আলী (র.) বললেন, হাদিসটি সহিহ হওয়ার ব্যাপারে অভিযোগ করার কারণে তাঁর উপর ইস্তিগ্রাকের (ব্যাপ্তি, অন্তর্ভুক্তি, নিমগ্নতা, স্থায়িত্ব) ফয়েজ নিক্ষেপ করে হজরত নবী করিম (দ.)’র জিয়ারত করে দিলাম। নবী করিম (দ.) বললেন, হে ছায়াদত! এটি আমার হাদিস। মাওলানা রুহুল আমিন বসিরহাটি তাঁর ওস্তাদ মাওলানা সুফি আবদুশ শাফী সাহেবের মুখে শুনেছেন যে, “সুফি ফতেহ আলী (র.) মুরিদগণকে নবী (দ.)’র জিয়ারত করে দিতেন, এজন্য তিনি কয়েকবার তাঁর বাসস্থানে মুরিদ হওয়ার উদ্দেশ্যে গমন করলেও ভাগ্যক্রমে দেখা হয়নি’’। এজন্য সুফিরা তাঁকে ‘রাসূলনোমা’ উপাধিতে ভূষিত করেন। অলি-আল্লাহগণের কাশফ সত্য, যদি তা কুরান ও হাদিস সম্মত হয়। এজন্য আল্লাহ তা’আলা সুরা ইনশিরাহ নাযিল করেছেন। জনৈক মুরীদ সুফি ফতেহ আলী (র.)’র নিকট উপস্থিত হয়ে বললেন, “আমি এত পরিশ্রম করা সত্তে¡ও ক্বলব জারি হচ্ছে না! উত্তরে তিনি বললেন, তুমি সুদখোরের জিয়াফত খাও নাকি? উত্তরে মুরিদ বললেন, হ্যাঁ- আমার জামাতা সুদখোর। সুফি সাহেব (র.) বললেন এজন্য তোমার ক্বলব জারি হচ্ছেনা। তৎপর সুফি সাহেব মুরিদকে বললেন, এই বিছানার দিকে দৃষ্টিপাত করো। লোকটি দেখতে পেলেন- সুফি সাহেবের তাওয়াজ্জুহের কারণে বিছানাটি বিকম্পিত হচ্ছে! তারপর সুফি সাহেব বললেন, হারাম আহারের কারণে তোমার হৃদয় এতই কলুষিত যে, ক্বলব কম্পিত হচ্ছেনা”। কলকাতার ধর্মতলা পাঁচ রাস্তার মোড়ে সুফি ফতেহ আলী (র.) প্রতি বিকেলবেলা জনগণকে হেদায়েতের বাণী শুনাতেন এবং সমধুর কন্ঠে বক্তব্য রাখতেন। এ কারণে ইংরেজ সরকার- তাঁকে ১৮ রাউন্ড গুলি করে হত্যা করার নির্দেশ দিয়েছিলো। পুলিশগণ গুলি ছুড়তে থাকলেও একটা গুলি-ও তাঁর শরীরে লাগেনি। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইংরেজ সেনারা তাঁর মুবারক হাতে ইসলাম কবুল করেন। তিনি প্রত্যক্ষভাবে রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত না থাকলে-ও পরোক্ষভাবে ধর্ম রক্ষার্থে রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। সিপাহি বিদ্রোহের মূল রূপকারদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম।

তিনি লন্ডনে গোলটেবিল বৈঠকে নবাব ওয়াজিদ আলী শাহের প্রেরিত প্রতিনিধি দলের নায়কত্বে ছিলেন। উপমহাদেশের নানান সমস্যা নিরসনের জন্য- স্যার সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী, শ্রীরামকৃষ্ণ, স্বামী বিবেকানন্দের মতো মহান মনীষীগণ সৈয়দ ফতেহ আলী (র.)’র সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতেন। তাঁর কারামাত, চরিত্র, বাগ্মিতা, কবিতা আবৃত্তি, বক্তৃতা, পাঠদান পদ্ধতি, মানবসেবা ও জনসেবামূলক কাজ গুলো ছিলো চোখে পড়ার মত। বিনা দাওয়াতে কারো বাড়ীতে যেতেন না। দাওয়াতও তেমন গ্রহণ করতেন না তবে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে দাওয়াত কবুল করতেন। তিনি ফারসি ভাষার উপর অনবদ্য মহাকাব্যগ্রস্থ ‘দিওয়ানে ওয়াইসী’ লিখে ফারসি সাহিত্যকে সমৃদ্ধি করেছেন। তিনি ছিলেন এশিয়া মহাদেশের প্রথম ফারসি মহাকবি। গ্রন্থে ১৭৯ টি গজল এবং ২৩ টি কবিতা সন্নিবেশিত করা হয়েছে। কাব্যগ্রন্থটি বাংলাদেশের ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়াসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। দিওয়ানে ওয়াইসির কবিতাংশ-

মুশরেক্কে হুব্বে মুহাম্মদ মাতলায়ে দিওয়ান ই মা
মাতলায়ে খুরশিদে এশকেশ সিনে এ সুযানে মা।
দার তাহে হার লাফয পেনহান নালেয়ে দেল সুযে মা
ওয়া যে বুনে হার হারফ পায়দা অতাশে পেনহানে মা।

এ মহান অলি-আল্লাহর প্রিয় খাবার ছিলো- দুধ, আম, বেদানা, লাউ, শাক, গুড়, পান। প্রতিটি সালাতের পর সুনির্দিষ্ট দোয়া-দরুদ, তজবীহ, মুরাক্বাবা-মুশাহেদা নিয়মিত আদায় করতেন। ওয়াক্তিয়া নামাজান্তে মুরিদদের মোরাক্বাবা করাতেন। বিশেষত বাদে মাগরিব। প্রত্যেহ তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করতেন। প্রায়শ আল্লাহর এবাদত ও নবীয়ে পাকের দরুদে তাঁর জাবান অবিশ্রান্ত থাকত। অনুকরণীয় চারিত্রিক দিক সমূহ- মিছওয়াক ব্যবহার, অট্টহাসি পরিহার, আড়ম্বর জীবন-যাপন, ঈদ উৎসবে শেওয়ানী পরিধান, চারকলি গোল টুপি পরিধান, নাগড়া জুতা ব্যবহার, আতর ও খুশব ব্যবহার, একশত মোটা দানার তসবিহ গণনা, নিজ হস্তে লিখিত নকল কুরআন শরীফ পাঠ, সাধারণ কাপড়-চোপড় পরিধান করা, চোখে সুরমা ব্যবহার করা, মাজার জেয়ারত করা, ছোটবড় সবাইকে প্রথমে সালাম দেওয়া, পীড়িতদের সান্ত¡না ও দেখাশুনা করা, মৃতের জানাযায় সানন্দে উপস্থিত হওয়া, মৃতের মাগফিরাত কামনা করা, অশ্রæ বিসর্জনে আল্লাহ ও রাসূলের প্রেমে ভক্তি নিবেদন করা, ধীরগতিতে এবং আস্তে আস্তে সাথে কথা বলা, গৃহের ও পাড়ার কুকুর-বিড়ালদের আহার করানো, কনকনে শীতের সময় সামান্য একখানা পাতনা ফিনফিনে চাদর গায়ে দিয়ে সারারাত মুরাক্বাবায় নিমগ্ন থাকা, পাখিদের খাবার দেওয়া, প্রাত্যহিক ওয়াক্তিয়া সালাতের ন্যায় সালাতুল তাহাজ্জুদ, এশরাক ও চাশত আদায় করা, অতি গুরুত্বের সাথে রমজানের রোজা, শবে বরাত ও আশুরায় রোজা রাখা, আশুরা-শবে বরাত-শবে মিরাজ-আখেরি চাহার শোম্বা-ফাতেহা-ই-দোয়াজ দাহম-ফাতেহা-ই-ইয়াজ দাহমে বিশাল আয়োজনে মিলাদ মাহফিল উদযাপন করা, প্রায়শ নীরবে আল্লাহর ধ্যানে নিমগ্ন থাকা, অত্যধিক মুরাক্বাবা ও মুশাহেদা করা। মানুষের প্রতি তিনি ভীষণ দরদি ও দয়ালু প্রকৃতির ছিলেন। মানুষের দুঃখ দুর্দশা দেখলে নিজকে স্থির রাখতে পারতেন না। সাধ্যমতে আর্থিক অনুদান ও সহযোগিতা করতেন। মুরিদানের প্রতি যথেষ্ট দয়ালু ছিলেন। মুুরিদানের কষ্ট দেখলে হুহু করে কাঁদতেন। মুরিদানদের সার্বিক উন্নতির জন্য আল্লাহর দরবারে অনবরত ফরিয়াদ করতেন। বিপদগ্রস্থ, ঋণগ্রস্থ, অসহায়, গরীব, ফকির, মিসকিনদের অকাতরে দানখয়রাত করতেন। আর্থিক সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদ করতেন না। পাড়ার প্রতিবেশীদের খোঁজ-খবর রাখতেন। হাদিয়া হিসেবে শুধুমাত্র খাদ্যদ্রব্য গ্রহণ করতেন, তবে তা কিন্তু গরীবদের মাঝে বিতরণ করে দিতেন। নগদ অর্থ ও উপহার গ্রহণ করতেন না। কীট-পতঙ্গ যেমন মরিয়া হয়ে আলোক শিখার পানে ধাবিত হয়, তেমনি বাংলা, বিহার, উড়িষ্যা, মধ্যপ্রদেশ, যুক্তপ্রদেশ, পাঞ্জাব, ভূপাল এমন কি সুদূর বলখ, বাদাখশান, খোরাসান ও মদিনা শরীফ হতে সত্য সন্ধানীগণরা সমাগম হয়ে সিরাতুল মুস্তাকিম পাওয়ার আশায় তাঁর পবিত্র চরণে লুটিয়ে পড়ে মুবারক হাতে বায়’আত গ্রহণ করতেন। বিশে^র বহু দেশে তাঁর অসংখ্য অনুসারী ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। তাঁর প্রত্যেক মুরিদ সন্তান ও খলিফাদের খোদাপ্রেম এবং নবীপ্রেম ও আধ্যাত্ম জগতের পূর্ণ শিক্ষা-দীক্ষা প্রদান করে পরিপূর্ণ ভাবে কামেল পীরের মর্যাদায় সমাসীন করে নিজনিজ দেশে ধর্মপ্রচারর্থে প্রেরণ করেছিলেন। তাঁরা যদিও আমাদের কাছে অতীত কিন্তু তাঁদের সোনালী যুগের মহৎ কাজগুলো আমাদের কাছে বর্তমান এবং অনুকরণীয়। ১৮৮৬ সালের ৬ ডিসেম্বর, রবিবার বিকাল চার ঘটিকায় বেছালে হক্ব লাভ করেন। ১৮৮৬ সালের ৯ ডিসেম্বর বুধবার দিবাগত রাতে কলকাতার মানিকতলা লালবাগান মহল্লার ২৪/১, মুন্সিপাড়া লেনের দুই নম্বর দিল্লিওয়ালা কবরস্থানে তাঁকে শায়িত করা হয়। ভারতের গভর্নর জেনারেল, বৃটিশরাণী, বাংলার লেফটেন্যান্ট গভর্নর, কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি, দেওবন্দ মাদরাসার প্রিন্সিপাল, দেশের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান, সরকারি আধিকারি প্রমুখ শোক প্রকাশ করেছেন।

লেখক: গবেষক, বিশ্লেষক, সাহিত্যিক, কলামিস্ট।


বিভাগ : ধর্ম দর্শন


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

বড়দিনের ধর্মীয় ইতিহাস ও তাৎপর্য
ইসলামি অর্থনীতির স্বরূপইসলামি অর্থনীতির স্বরূপ
আল-কুরআন তাজকেরায়ে মীলাদ নামায়ে আম্বিয়া (আ:)
ঘুষ : দেয়া-নেয়া দুটিই অপরাধ
প্রশ্ন: আমার নামাজ আমার অনুভ‚তি কেমন হওয়া উচিৎ?
আরও

আরও পড়ুন

এবার ৯৭ বলে অপরাজিত ২০১ রিজভির

এবার ৯৭ বলে অপরাজিত ২০১ রিজভির

উপদেষ্টা হাসান আরিফের মৃত্যুতে সোমবার রাষ্ট্রীয় শোক

উপদেষ্টা হাসান আরিফের মৃত্যুতে সোমবার রাষ্ট্রীয় শোক

বাংলাদেশী রোগী পেতে সীমান্ত পর্যন্ত মেট্রো চালু করবে ভারত, সমালোচনার ঝড়

বাংলাদেশী রোগী পেতে সীমান্ত পর্যন্ত মেট্রো চালু করবে ভারত, সমালোচনার ঝড়

ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরুকে নিয়ে জনগণের অসন্তোষ

ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরুকে নিয়ে জনগণের অসন্তোষ

ইসরায়েলে হামলার জবাবে এবার ইয়েমেনে বিমান হামলা চালাল যুক্তরাষ্ট্র

ইসরায়েলে হামলার জবাবে এবার ইয়েমেনে বিমান হামলা চালাল যুক্তরাষ্ট্র

কাপ্তাই লেকে জেগে ওঠা ভাসামান তীরে সবুজ ফসলের সমারোহ

কাপ্তাই লেকে জেগে ওঠা ভাসামান তীরে সবুজ ফসলের সমারোহ

বেনাপোলে ভারতগামী পাসপোর্ট যাত্রীর টাকা ছিনতাই, ৩ দালাল আটক

বেনাপোলে ভারতগামী পাসপোর্ট যাত্রীর টাকা ছিনতাই, ৩ দালাল আটক

ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে শাহবাগ অবরোধ করলেন বিএসএমএমইউয়ের চিকিৎসকরা

ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে শাহবাগ অবরোধ করলেন বিএসএমএমইউয়ের চিকিৎসকরা

বাধা না থাকলেও গণহত্যাকারী ফ্যাসিবাদকে মানুষ নির্বাচনে আসতে দেবে না : আখতার হোসেন

বাধা না থাকলেও গণহত্যাকারী ফ্যাসিবাদকে মানুষ নির্বাচনে আসতে দেবে না : আখতার হোসেন

সালথায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে চলছে ডাকাতির নাটক, বিব্রত পুলিশ!

সালথায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে চলছে ডাকাতির নাটক, বিব্রত পুলিশ!

শিল্পকলায় শুরু হয়েছে মাসব্যাপী ভাস্কর্য প্রদর্শনী

শিল্পকলায় শুরু হয়েছে মাসব্যাপী ভাস্কর্য প্রদর্শনী

এনআইডির তথ্য বেহাত, কম্পিউটার কাউন্সিলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলো ইসি

এনআইডির তথ্য বেহাত, কম্পিউটার কাউন্সিলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলো ইসি

সোনারগাঁও বুরুমদী উচ্চ বিদ্যালয়ের হীরক জয়ন্তী উদযাপন

সোনারগাঁও বুরুমদী উচ্চ বিদ্যালয়ের হীরক জয়ন্তী উদযাপন

ঈশ্বরগঞ্জ পৌরসভার পাওনা টাকা পরিশোধ না করলে মামলা- পৌর প্রশাসক ইকবাল হোসাইন

ঈশ্বরগঞ্জ পৌরসভার পাওনা টাকা পরিশোধ না করলে মামলা- পৌর প্রশাসক ইকবাল হোসাইন

সাদপন্থী তাবলীগের মুখপাত্র মুয়াজের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

সাদপন্থী তাবলীগের মুখপাত্র মুয়াজের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

পূর্বাচলে বুয়েট ছাত্রের মৃত্যু : তিন আসামি ২ দিনের রিমান্ডে

পূর্বাচলে বুয়েট ছাত্রের মৃত্যু : তিন আসামি ২ দিনের রিমান্ডে

লক্ষ্মীপুরে সরকারি রাস্তা কেটে যুবলীগ নেতার চাষাবাদ, প্রতিবাদে মানববন্ধন

লক্ষ্মীপুরে সরকারি রাস্তা কেটে যুবলীগ নেতার চাষাবাদ, প্রতিবাদে মানববন্ধন

কলাপাড়ায় গরু চুরি করে পালানোর সময় জনতার হাতে আটক চোর

কলাপাড়ায় গরু চুরি করে পালানোর সময় জনতার হাতে আটক চোর

এবার পানামা খাল নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার হুমকি ট্রাম্পের

এবার পানামা খাল নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার হুমকি ট্রাম্পের

মাগুরায় গ্রামবাসির সংঘর্ষে নিহত যুবদল নেতা শরিফুলের বাড়িতে বিএনপি নেতারা

মাগুরায় গ্রামবাসির সংঘর্ষে নিহত যুবদল নেতা শরিফুলের বাড়িতে বিএনপি নেতারা